সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০১৭
মুফিদ। কি করে একা রবো। """"""""''''''''''""""""""'"'"''''' বিয়ে বাড়ির সবাই গাড়ির কাছে এসেছে। সবার মাঝে একজনকে দেখতে পাচ্ছে না রুপা। গাড়ি ছেড়ে দিবে হঠাৎ রুপার ছোট বোন দৌড়ে এসে একটা কাগজ হাতে দিল রপাকে। বললো নিরব ভাইয়ার চিঠি। রুপা কাগজটা খুলে পড়ছে.... প্রিয় #রুপা তুমি হয়তো সবার মাঝে আমাকে খুঁজছো। কিন্তু আমি তো আর আসতে পারবো না। আমাকে যে ঘুমাতে হবে। রুপা তোমার মনে আছে? আমি ছোটকাল এবং পরে কিশোরকাল থেকেই তোমার সাথে ঘুমাতাম। তুমি আমাকে সারাক্ষন জ্বালাতন করতে। কখনও কিল ঘুষি দিয়ে, কখনও সুরসুরি দিয়ে, কখনও পেটের উপড় পা তুলে দিয়ে শুতে। আর আমি দুষ্টুমি করে তোমাকে জড়িয়ে ধরতাম, চুমু দিতাম, বুকের মাঝে জড়িয়ে নিতাম। তখন তুমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে। এরপর যখন যৌবনে পা দিলাম তখন তোমার আমার পরিবার তোমাকে আর আমাকে একসাথে থাকতে দিতো না। তখন আমার খুব কষ্ট হতো। এটা জানতে পারার পর তুমি গভির রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে যেত তখন তুমি চুপিচুপি আমার ঘরে আসতে। আমাকে চমকে দিয়ে আমার বুকের উপর শুয়ে পড়তে। কখনও আমাকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে তুমি নিজেই ঘুমিয়ে যেতে। তখন আমি তোমায় বুকের মাঝে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে যেতাম। আবার খুব ভোরে কেউ উঠার আগেই তোমাকে ডেকে তুলতাম। আর তুমি লজ্জায় আমাকে ঝটকা মেরে উঠতে। যাওয়ার সময় আমার গালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে যেতে। রুপা তেমার মনে আছে? তুমি আমি একসাথে থাকতাম। তোমাকে বউ বলে ডাকতাম বলে সবাই আমাকে পাগল বলতো। একদিন তোমার পা কেটে গেলো সেদিন তোমাকে একা ফেলে স্কুলে যেতে হতো তাই একটা পাগলামি করেছিলাম যা তুমি এখনও জানোনা। সবাই যখন তোমায় নিয়ে ব্যস্ত তখন আমি রান্নাঘরে গিয়ে দা টা নিয়ে নিজের পা নিজেই কেটে ফেলি তোমার সঙ্গে থাকবো বলে। তোমাকে কষ্টের মুহুর্তে একা রেখে স্কুলে যেতে চাইনি বলে এমন পাগলামি করেছিলাম। এভাবে অনেক পাগলামি করেছি শুধু তোমাকে কাছে পাবার জন্য। তোমার সাথে সারাজীবন থাকার জন্য। কিন্তু কখনও ভাবিনি আমার এই পাগলামির জন্য আমাকে পাগল ভেবে তোমাকে আমার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দেবে। ভেবেছিলাম তুমি অন্তত জানো আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। কিন্তু কখনও ভাবিনি তুমিও আমাকে পাগল মনে করে অন্য কাউকে জীবনসাথী করতে যাবে। জানো আজ যখন তুমি বউ সাজছিলে তখন আমার না খুব বেশি কষ্ট হচ্ছিলো গো। তোমাকে ছাড়া আমি কেমনে থাকবো, ঘুমাবো কেমনে? তুমি আমার বউ হবেনা অন্যের কাছে চলে যাবে। এই কষ্টটা সইতে পারিনি। খুব করে চাইলাম আজকের দিনটা কোনোরকম ভুলে থাকি তোমায়। কিন্তু সারাটা দিন বুকের ভিতরটা কেমন জানি করছিলো। তুমি যখন বউ সেজে সবাইকে বিদায় দিয়ে বরের সাথে গাড়ির দিকে যাচ্ছিলে... তখন না আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো। :-( যেই মানুষটাকে ছাড়া একটা মুহুর্তও থাকিনি... সেই মানুষটাই আজ আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। অথচ আমার কাছে বিদায় ও নিতে আসছে না। আমার কথা একটু ও মনে করছে না। তখন না আমি তোমাকে ভুলে থাকার জন্য ঘরে যাই ঘুমাতে। কিন্তু বিছানায় গিয়ে শুধু ছটফট করি। তুমি ঘুম পাড়িয়ে না দিলে তো আমার ঘুম আসে না। তাই আমি না ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছি। তবে এই ঔষুধ খেলে চিরতরে ঘুমিয়ে যায় মানুষ। কি করবো বলো? তুমি ছাড়াতো ঘুমাতে পারবো না। আর তুমিও কোনদিন আর আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে আসবে না। তুমি এই চিঠিটা পড়তে পড়তে হয়তো আমি চিরতরে ঘুমিয়ে গেছি। তুমি আমার ঘরে এসে দেখো। ইতি, তোমার *পাগলটা* . চিঠিটা ফেলে দিয়ে চিৎকার করে দৌড়ে নিরবের ঘরে যায় রুপা। সবাই পিছু পিছু যায়। গিয়ে দেখে সত্যিই ঘুমিয়ে গেছে নিরব চিরতরে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন