সোমবার, ২৫ মে, ২০১৫
রচনা। শবেবরাত সম্পর্কে। প্রকাশক, মুফতী,মুফিদ। ১ম পর্ব : শবে বরাতের বাস্তবতা * সালাফীদের মাথা ব্যথা দলীল দ্বারা প্রমাণিত* কেন তারা মিথ্যায় রত? ১ম পর্ব : শবে বরাতের বাস্তবতা * সালাফীদের মাথা ব্যথা দলীল দ্বারা প্রমাণিত* কেন তারা মিথ্যায় রত? ❖প্রশ্ন : আজকাল কারো কারো মুখে শোনা যায় যে, শবে বরাত বলতে কিছু নেই, এ রাতের ফযীলত বিষয়ে যত রেওয়ায়েত আছে সব মওযূ বা যয়ীফ। তাই শবে বরাতকে ফযীলতপূর্ণ রাত মনে করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা জায়েয নয়। তাদের দাবী কি সঠিক? যদি সঠিক না হয় তাহলে হাদীস ও সুন্নাহর আলোকে শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন। ❖উত্তর : না তাদের দাবী সম্পূর্ণ ভুল ও ভ্রান্ত। শবে বরাত অর্থাৎ ১৫ শা’বানের রজনী। যার ফযীলত সম্পর্কে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন- ✏ ০১. হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) এর হাদীস- ﺻﺤﻴﺢ ﺍﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ - ﻣﺤﻘﻘﺎ (/12 481 ) 5665 - ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﻤُﻌَﺎﻓَﻰ ﺍﻟْﻌَﺎﺑِﺪُ ﺑِﺼَﻴْﺪَﺍ، ﻭَﺍﺑْﻦُ ﻗُﺘَﻴْﺒَﺔَ ﻭَﻏَﻴْﺮُﻩُ، ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻫِﺸَﺎﻡُ ﺑْﻦُ ﺧَﺎﻟِﺪٍ ﺍﻟْﺄَﺯْﺭَﻕُ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺧُﻠَﻴْﺪٍ ﻋُﺘْﺒَﺔُ ﺑْﻦُ ﺣَﻤَّﺎﺩٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺄَﻭْﺯَﺍﻋِﻲِّ، ﻭَﺍﺑْﻦِ ﺛَﻮْﺑَﺎﻥَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻣَﻜْﺤُﻮﻝٍ، ﻋَﻦْ ﻣَﺎﻟِﻚِ ﺑْﻦِ ﻳُﺨَﺎﻣِﺮَ ﻋَﻦْ ﻣُﻌَﺎﺫِ ﺑْﻦِ ﺟَﺒَﻞٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : «ﻳَﻄْﻠُﻊُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺧَﻠْﻘِﻪِ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟِﺠَﻤِﻴﻊِ ﺧَﻠْﻘِﻪِ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤُﺸْﺮِﻙٍ ﺃَﻭْ ﻣُﺸَﺎﺣِﻦٍ» অর্থ : হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতে (শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।-সহীহ ইবনে হিব্বান-১২/৪৮১, হাদীস-৫৬৬৫, কিতাবুস সুন্নাহ-১/২২৪, হাদীস-৫১২, আল ইহসান-৭/৪৭, মাওয়ারিদুয যমআন-৪৮৬, হাদীস-১৯৮০, মাজমাউ যাওয়াইদ-৮/৬৫, সিলসিলাতুস সহীহা-৩/১৩৫, হাদীস-১১৪৪, শোয়াবুল ঈমান-৩/৩৮২, হাদীস-৩৮৩৩, আল মু’জামুল কাবীর-২০/১০৮,১০৯, আততারগীব-২/২৪২ ইত্যাদি অসংখ্য কিতাব। ░▒▓█► হাদীসটির মান : হাদীসটি সম্পূর্ণ সহীহ ০১. ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.-৩৫৪) বলেন, হাদীসটি সহীহ। সহীহ ইবনে হিব্বান-১২/৪৮১, হাদীস-৫৬৬৫। ০২. আহলে হাদীসদের মহাগুরু শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানী(১৪২০) বলেন- ﺳﻠﺴﻠﺔ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻟﺼﺤﻴﺤﺔ ﻭﺷﻲﺀ ﻣﻦ ﻓﻘﻬﻬﺎ ﻭﻓﻮﺍﺋﺪﻫﺎ (/3 135 ) 1144 - " ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﺒﺎﺭﻙ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ﺇﻟﻰ ﺧﻠﻘﻪ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ، ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊ ﺧﻠﻘﻪ ﺇﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ ." ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ، ﺭﻭﻱ ﻋﻦ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺤﺎﺑﺔ ﻣﻦ ﻃﺮﻕ ﻣﺨﺘﻠﻔﺔ ﻳﺸﺪ ﺑﻌﻀﻬﺎ ﺑﻌﻀﺎ ﻭﻫﻢ ﻣﻌﺎﺫ ﺍﺑﻦ ﺟﺒﻞ ﻭﺃﺑﻮ ﺛﻌﻠﺒﺔ ﺍﻟﺨﺸﻨﻲ ﻭﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﻭﺃﺑﻲ ﻣﻮﺳﻰ ﺍﻷﺷﻌﺮﻱ ﻭﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻭﺃﺑﻲ ﺑﻜﺮ ﺍﻟﺼﺪﻳﻖ ﻭﻋﻮﻑ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﻭﻋﺎﺋﺸﺔ . উক্ত হাদীসটি সহীহ, যা সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এর এক বড় জামাত বর্ণনা করেছেন এবং একটি হাদীস অন্য হাদীস এর সনদকে আরো মজবুত করে তুলে। সাহাবীদের থেকে বর্ণনাকারীগণ হলেন (০১) হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) (০২) আবূ সালাবা আল খাসানী (রা.) (০৩) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (০৪) আবূ মূসা আল আশআরী (রা.) (০৫) আবূ হুরায়রা (রা.) (০৬) আবূ বকর সিদ্দীক (রা.) (০৭) আউফ ইবনে মালেক (রা.) (০৮) হযরত আয়েশা (রা.)। সিলসিলাতুস সহীহা-৩/১৩৫, হাদীস-১১৪৪। ০৩. আল্লামা মুনজেরী (রহ.-৬৫৬) বলেন উক্ত হাদীসটি সহীহ। আত তারগীব ওয়াত তারহীব-২/৭৩, হাদীস-১৫৪৬। ০৪. আল্লামা হায়সামী (রহ.-৮০৭) বলেন- ﻣﺠﻤﻊ ﺍﻟﺰﻭﺍﺋﺪ ﻭﻣﻨﺒﻊ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺪ (/8 65 ) ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟﻄَّﺒَﺮَﺍﻧِﻲُّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻜَﺒِﻴﺮِ ﻭَﺍﻟْﺄَﻭْﺳَﻂِ ﻭَﺭِﺟَﺎﻟُﻬُﻤَﺎ ﺛِﻘَﺎﺕٌ . উক্ত হাদীসটি ইমাম তাবরানী তার মুজামুল কাবীর ও আওসাতে সংকলন করেছেন, এবং সংকলিত হাদীস এর সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য। মাজমাওজ যাওয়েদ-৮/৬৫, হাদীস-১২৯৬০। ✏ ০২. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) এর হাদীস- ﻣﺴﻨﺪ ﺃﺣﻤﺪ (/6 197 ) 6642 - ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺣﺴﻦ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻦ ﻟَﻬِﻴﻌﺔ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺣﻴﻲُّ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺤُﺒُﻠّﻲ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ، ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻗﺎﻝ : "ﻳﻄَّﻠﻊُ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﺇﻟﻲ ﺧﻠﻘﻪ ﻟﻴﻠﺔَ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ، ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﻌﺒﺎﺩﻩ، ﺇﻻ ﻻﺛﻨﻴﻦ : ﻣﺸﺎﺣﻦٍ، ﻭﻗﺎﺗِﻞِ ﻧﻔﺲٍ ." অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ১৫ই শা’বানের রাত্রে আল্লাহ পাক তার বান্দাদের ক্ষমা করে দেন দুই ব্যক্তি ছাড়া। এক. পরশ্রীকাতর। দুই. অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যাকারী। মুসনাদে আহমদ-৬/১৯৭, হাদীস-৬৬৪২, মাজমাউস জাওয়ায়েদ-৮/৬৫, হাদীস-১২৯৬১, আত তারগীব ওয়াত তারহীব লিল মুনজেরী-৩/৩০৮, হাদীস-৪৮৯২। ইত্যাদি অসংখ্য কিতাব..। ░▒▓█► হাদীসটির মান : উক্ত হাদীসটি হাসান তথা প্রমাণযোগ্য। হাদীস এর সূত্রের মাঝে একজন বর্ণনাকারী হলেন ‘‘ইবনে লাহিয়া’’ কতক ইমাম তার সিকাহ বা নির্ভর হওয়ার বিষয়ে দ্বিমত পোশন করেছেন কিন্তু সঠিক সমাধান আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) , ইমাম আবূ হাফস ওমর ইবনে শাহিন (রহ.), আহমদ ইবনে সালেহ আল মিসরী, তাকে সিকাহ বা নির্ভরযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন। ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে ওহাব আল মিসরী বলেন- ﺍﻟﺼﺎﺩﻕ ﺍﻟﺒﺎﺭ ইমাম আব্দুর রহমান ইবনে ইউসূফ ইবনে খেরাশ (রহ.) বলেন- ﻳﻜﺘﺐ ﺣﺪﻳﺜﻪ হফেজ যাহাবী (রহ.) বলেন- ﺫﻛﺮﻩ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﺎﺷﻒ ، ﻭﻗﺎﻝ : ﺍﻟﻌﻤﻞ ﻋﻠﻰ ﺗﻀﻌﻴﻒ ﺣﺪﻳﺜﻪ আর আল্লামা হায়সামী (রহ.) বলেন- ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺃَﺣْﻤَﺪُ، ﻭَﻓِﻴﻪِ ﺍﺑْﻦُ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔَ ﻭَﻫُﻮَ ﻟَﻴِّﻦُ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ، ﻭَﺑَﻘِﻴَّﺔُ ﺭِﺟَﺎﻟِﻪِ ﻭُﺛِّﻘُﻮﺍ . অন্যত্র আল্লামা হায়সামী (রহ.) তার সূত্রে বর্ণিত হাদীসকে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন। নিন্মে তার দুটি দৃষ্টান্ত দেয়া হলো। ❐০১. নং হাদীস- ﻣﺠﻤﻊ ﺍﻟﺰﻭﺍﺋﺪ ﻭﻣﻨﺒﻊ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺪ (/1 53 ) 163 - « ﻭَﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮٍ - ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ - ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﻣَﺮَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﺳُﺤَﻴْﻤًﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﺆَﺫِّﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺃَﻥْ " ﻟَﺎ ﻳَﺪْﺧُﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ » ." ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺃَﺣْﻤَﺪُ، ﻭَﻓِﻴﻪِ ﺍﺑْﻦُ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔَ، ﻭَﺇِﺳْﻨَﺎﺩُﻩُ ﺣَﺴَﻦٌ . ❐০২. নং হাদীস- ﻣﺠﻤﻊ ﺍﻟﺰﻭﺍﺋﺪ ﻭﻣﻨﺒﻊ ﺍﻟﻔﻮﺍﺋﺪ (/1 155 ) 702 - ﻭَﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﺤَﺎﺭِﺙِ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ : " « ﻟَﻮَﺩِﺩْﺕُ ﺃَﻥَّ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺃَﻫْﻞِ ﻧَﺠْﺮَﺍﻥَ ﺣِﺠَﺎﺑًﺎ ﻣِﻦْ ﺷِﺪَّﺓِ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳُﺠَﺎﺩِﻟُﻮﻧَﻪُ » ." ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭُ ﻭَﺍﻟﻄَّﺒَﺮَﺍﻧِﻲُّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻜَﺒِﻴﺮِ، ﻭَﻓِﻴﻪِ ﺍﺑْﻦُ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔَ، ﻭَﺣَﺪِﻳﺜُﻪُ ﺣَﺴَﻦٌ . ❀ এছাড়াও ইমাম মুসলিম (রহ.) তার সহীহ মুসলিমে ‘‘ইববে লাহিয়ার’ সনদে বর্ণিত হাদীসকে উল্লেখ করছেন- ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ (/1 435 ) 197 - (624 ) ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﻤْﺮُﻭ ﺑْﻦُ ﺳَﻮَّﺍﺩٍ ﺍﻟْﻌَﺎﻣِﺮِﻱُّ، ﻭَﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺍﻟْﻤُﺮَﺍﺩِﻱُّ، ﻭَﺃَﺣْﻤَﺪُ ﺑْﻦُ ﻋِﻴﺴَﻰ، ﻭَﺃَﻟْﻔَﺎﻇُﻬُﻢْ ﻣُﺘَﻘَﺎﺭِﺑَﺔٌ، ﻗَﺎﻝَ ﻋَﻤْﺮٌﻭ : ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ، ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﺂﺧَﺮَﺍﻥِ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺍﺑْﻦُ ﻭَﻫْﺐٍ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﻋَﻤْﺮُﻭ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﺤَﺎﺭِﺙِ، ﻋَﻦْ ﻳَﺰِﻳﺪَ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺣَﺒِﻴﺐٍ، ﺃَﻥَّ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺑْﻦَ ﺳَﻌْﺪٍ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِﻱَّ، ﺣَﺪَّﺛَﻪُ ﻋَﻦْ ﺣَﻔْﺺِ ﺑْﻦِ ﻋُﺒَﻴْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ، ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ، ﺃَﻧَّﻪُ ﻗَﺎﻝَ : " ﺻَﻠَّﻰ ﻟَﻨَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻌَﺼْﺮَ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍﻧْﺼَﺮَﻑَ ﺃَﺗَﺎﻩُ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ، ﺇِﻧَّﺎ ﻧُﺮِﻳﺪُ ﺃَﻥْ ﻧَﻨْﺤَﺮَ ﺟَﺰُﻭﺭًﺍ ﻟَﻨَﺎ، ﻭَﻧَﺤْﻦُ ﻧُﺤِﺐُّ ﺃَﻥْ ﺗَﺤْﻀُﺮَﻫَﺎ " ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﺎﻧْﻄَﻠَﻖَ ﻭَﺍﻧْﻄَﻠَﻘْﻨَﺎ ﻣَﻌَﻪُ، ﻓَﻮَﺟَﺪْﻧَﺎ ﺍﻟْﺠَﺰُﻭﺭَ ﻟَﻢْ ﺗُﻨْﺤَﺮْ، ﻓَﻨُﺤِﺮَﺕْ، ﺛُﻢَّ ﻗُﻄِّﻌَﺖْ، ﺛُﻢَّ ﻃُﺒِﺦَ ﻣِﻨْﻬَﺎ، ﺛُﻢَّ ﺃَﻛَﻠْﻨَﺎ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﺗَﻐِﻴﺐَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ » ﻭﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻤُﺮَﺍﺩِﻱُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺍﺑْﻦُ ﻭَﻫْﺐٍ، ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻟَﻬِﻴﻌَﺔَ، ﻭَﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﺤَﺎﺭِﺙِ ﻓِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳﺚِ উক্ত হাদীসটিকে উল্লেখ করেছেন। (আর মুসলিম এর সকল হাদীস সহীহ তার মাঝে কোন সন্দেহ নেই) অতঃপর ইমাম মুসলিম (রহ.) নিজ উস্তাদ আল্লামা মুরাদী (রহ.-২৪৮) এর উক্তি উল্লেখ করেছেন যে, তিনি বলেন নিন্ম হাদীসটি আমি শুনেছি ইবনে ওহাব থেকে, তিনি ‘‘ইবনে লাহিয়া’’ থেকে, তিনি আমর ইবনে হারেস থেকে বর্ণনা করেছেন। প্রিয় পাঠক এখন আপনি নিজেই ভেবে দেখুন “ইবনে লাহিয়া” কি প্রমাণযোগ্য কি না? সহীহ মুসলিম-১/৪৩৫, হাদীস-৬২৪। ❁প্রিয় পাঠক বৃন্দ উক্ত দুটি হাদীস দ্বারা আমরা স্পষ্ট যে, আহলে হাদীস ভাইদের নিন্ম দাবী- ❏‘‘শবে বরাত বলতে কিছু নেই, এ রাতের ফযীলত বিষয়ে যত রেওয়ায়েত আছে সব মওযূ বা যয়ীফ। তাই শবে বরাতকে ফযীলতপূর্ণ রাত মনে করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা জায়েয নয়।’’❏ এ দাবীটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কেননা শবে বরাত/১৫ শা’বান ইবাদত করা কোন বেতআতী পন্থা নয়, বরং সহীহ হাদীস দ্বারা এই রাত্রি প্রমাণিত এবং এটি মহান আল্লাহ ক্ষমা করার এক মহা রাত্রি। অতএব মানুষের মাঝে মিথ্যাচার করার সুযোগ আর বাকী রইলো কোথা থেকে? ✪✿ বি. দ্র. কয়েকটি পর্বে সংক্ষেপে এই বিষয়ের আলোচনা শেষ করবো, কেননা বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে প্রায় ২০০ এর অধিক পৃষ্ঠায় একটি পুস্তিকায় পরিণত হবে। শেষ পর্বে আপনাদের জন্য বিষেশ উপহার থাকবে আর তা হলো আহলে হাদীস ভাইদের কোন কোন ইমাম উক্ত রাত্রি পালন করা ও প্রামাণিত হওয়ার প্রবক্তা। ✔মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক দ্বীন বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন SUNDAY, MAY 24, 2015 Mufti Sanaullah at 6:35 AM ০১ম পর্ব : তাবলীগ বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে এখন এতেকাফ নিয়েও বিভ্রান্তিতে সালাফীগণ ০১ম পর্ব তাবলীগ বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে এখন এতেকাফ নিয়েও বিভ্রান্তিতে সালাফীগণ ❖ প্রশ্ন : কথিত আহলে হাদীস তথা সালাফী ভাইয়েরা বলেন, তাবলীগের সাথীগণ (রমজান ব্যতীত) এতেকাফের নিয়ত করে মসজিদে অবস্থান করেন, অথচ ইসলামে ইতেকাফ বলতে মাহে রমজানের শেষ দশ দিন ছাড়া আর কোথাও নেই। তাহলে তারা কিসের এতেকাফ করে? তাদের এই তথ্য কি সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন। ❖ জবাব : তাদের এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল ও মুসলিমদেরকে প্রকৃত দ্বীনের মেহনত থেকে সরিয়ে দিতে এই ষড়যন্ত্রের পন্থা অবলম্বন করেছে। আমরা তাদেরকে লক্ষ করে বলতে চাই ‘‘যতই তোমরা ফেৎনা কর, নিত্য নতুন ফন্দি আঁক লাভ হবে না।’’ কেননা কোরআন ও সুন্নাহের দৃষ্টিতে দেখলে এতেকাফ তিন প্রকার। তা সাব্যস্ত হয়। যা নিন্মে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো- ✏ আল্লামা ইবনে আবেদীন শামি (রহ.) বলেন- ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ ﻭﺣﺎﺷﻴﺔ ﺍﺑﻦ ﻋﺎﺑﺪﻳﻦ (ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ) (/2 441 ) ( ﻭَﻫُﻮَ ) ﺛَﻠَﺎﺛَﺔُ ﺃَﻗْﺴَﺎﻡٍ ( ﻭَﺍﺟِﺐُ ﺍﻟﻨَّﺬْﺭِ ) ﺑِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻭَﺑِﺎﻟﺸُّﺮُﻭﻉِ ﻭَﺑِﺎﻟﺘَّﻌْﻠِﻴﻖِ ﺫَﻛَﺮَﻩُ ﺍﺑْﻦُ ﺍﻟْﻜَﻤَﺎﻝِ ( ﻭَﺳُﻨَّﺔٌ ﻣُﺆَﻛَّﺪَﺓٌ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮِ ﺍﻟْﺄَﺧِﻴﺮِ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ) ﺃَﻱْ ﺳُﻨَّﺔُ ﻛِﻔَﺎﻳَﺔٍ ﻛَﻤَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺒُﺮْﻫَﺎﻥِ ﻭَﻏَﻴْﺮِﻩِ ﻟِﺎﻗْﺘِﺮَﺍﻧِﻬَﺎ ﺑِﻌَﺪَﻡِ ﺍﻟْﺈِﻧْﻜَﺎﺭِ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﻔْﻌَﻠْﻪُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺼَّﺤَﺎﺑَﺔِ (ﻣُﺴْﺘَﺤَﺐٌّ ﻓِﻲ ﻏَﻴْﺮِﻩِ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺄَﺯْﻣِﻨَﺔِ ) ﻫُﻮَ ﺑِﻤَﻌْﻨَﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﺍﻟْﻤُﺆَﻛَّﺪَﺓِ . অর্থ : এতেকাফ তিন প্রকার (১) ওয়াজিব যা মানত করার দ্বারা আবশ্যক হয়ে থাকে.....। (২) সুন্নাতে মুয়াক্কাদায়ে কেফায়া, যা মাহে রমজানের শেষ দশ দিনে থাকা হয়। (কেফায়া এজন্য বলা হয়েছে যে, মহল্লার মাঝে সবাই থাকতে হয় বরং একজন থাকলেই সকলের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। (৩) উল্লেখিত দুই প্রকার ব্যতীত অন্য যে কোন সময় এতেকাফ করা মুস্তাহাব/নফল। আদ দুররুল মুখতার ও হাশিয়াতু ইবনে আবেদীন-২/৪৪১। ✏ ০১. ওয়াজিব এতেকাফ এর দলীল- ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ (/3 48 ) 2032 - ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺴَﺪَّﺩٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﺑْﻦُ ﺳَﻌِﻴﺪٍ، ﻋَﻦْ ﻋُﺒَﻴْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﻧَﺎﻓِﻊٌ، ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﺃَﻥَّ ﻋُﻤَﺮَ ﺳَﺄَﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨْﺖُ ﻧَﺬَﺭْﺕُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺃَﻥْ ﺃَﻋْﺘَﻜِﻒَ ﻟَﻴْﻠَﺔً ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟﺤَﺮَﺍﻡِ، ﻗَﺎﻝَ : «ﻓَﺄَﻭْﻑِ ﺑِﻨَﺬْﺭِﻙَ» অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় তার পিতা হযরত ওমর (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলো যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি জাহেলী যুগে মানত করেছি যে, আমি মাসজিদে হারামে এতেকাফ করবো, (এখন আমাকে কি এতেকাফ করতে হবে?) রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি অবশ্যই তোমার মানতকে পুরা কর। বুখারী-৩/৪৮, হাদীস-২০৩২। ❐ অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন- ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ (/8 142 ) 6696 - ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﻧُﻌَﻴْﻢٍ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣَﺎﻟِﻚٌ، ﻋَﻦْ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻤَﻠِﻚِ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻘَﺎﺳِﻢِ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : « ﻣَﻦْ ﻧَﺬَﺭَ ﺃَﻥْ ﻳُﻄِﻴﻊَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻓَﻠْﻴُﻄِﻌْﻪُ، ﻭَﻣَﻦْ ﻧَﺬَﺭَ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﺼِﻴَﻪُ ﻓَﻼَ ﻳَﻌْﺼِﻪِ » অর্থ : হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ যদি আল্লাহর আনুগত্যের মানত করে, তাহলে সে যেন অবশ্যই তা পুরা করে, আর কেউ যদি গুনাহের মানত করে, তাহলে সে যেন ঐ গুনাহ না করে। বুখারী-৮/১৪২, হাদীস-৬৬৯৬। উল্লেখিত দুটি হাদীস দ্বারা মানত করলে এতেকাফ করা ওয়াজিব তা প্রমাণিত। ✏ ০২. সুন্নাত এতেকাফ এর দলীল- ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ (/3 47 ) 2025 - ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺇِﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨِﻲ ﺍﺑْﻦُ ﻭَﻫْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﻳُﻮﻧُﺲَ، ﺃَﻥَّ ﻧَﺎﻓِﻌًﺎ، ﺃَﺧْﺒَﺮَﻩُ ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ، ﻗَﺎﻝَ : «ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟﻌَﺸْﺮَ ﺍﻷَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ » অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সা.) মাহে রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন। (অন্য হাদীসে এসেছে আর সুন্নাত হলো মাহে রমজানের শেষ দশ দিন এতকাফ করা)। বুখারী-৩/৪৭, হাদীস-২০২৫। ✏ ০৩. নফল এতেকাফ এর দলীল- }ﻭَﻋَﻬِﺪْﻧَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻭَﺇِﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞَ ﺃَﻥْ ﻃَﻬِّﺮَﺍ ﺑَﻴْﺘِﻲَ ﻟِﻠﻄَّﺎﺋِﻔِﻴﻦَ ﻭَﺍﻟْﻌَﺎﻛِﻔِﻴﻦَ ﻭَﺍﻟﺮُّﻛَّﻊِ ﺍﻟﺴُّﺠُﻮﺩِ { [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : 125] অর্থ : আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, এতেকাফ (অবস্থানকারী) ও রুকু সেজদাকারীদের জন্যে পবিত্র রাখ। সূরা আল বাক্বারা-১২৫। }ﻛُﻠَّﻤَﺎ ﺩَﺧَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺯَﻛَﺮِﻳَّﺎ ﺍﻟْﻤِﺤْﺮَﺍﺏَ ﻭَﺟَﺪَ ﻋِﻨْﺪَﻫَﺎ ﺭِﺯْﻗًﺎ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺎ ﻣَﺮْﻳَﻢُ ﺃَﻧَّﻰ ﻟَﻚِ ﻫَﺬَﺍ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻫُﻮَ ﻣِﻦْ ﻋِﻨْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﺮْﺯُﻕُ ﻣَﻦْ ﻳَﺸَﺎﺀُ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏٍ { [ ﺁﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : 37] যখনই যাকারিয়া (মসজিদের) মেহরাবের মধ্যে তার কাছে আসতেন তখনই কিছু খাবার দেখতে পেতেন। জিজ্ঞেস করতেন ‘মারইম’ ! এসব খাবার তোমার কাছে কোথা থেকে এলো? তিনি বলতেন, এসব আল্লাহর নিকট থেকে আসে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান করেন। সূরা আল ইমরান-৩৭। } ﻭَﻟَﺎ ﺗُﺒَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﻭَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﻋَﺎﻛِﻔُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴَﺎﺟِﺪِ ﺗِﻠْﻚَ ﺣُﺪُﻭﺩُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻘْﺮَﺑُﻮﻫَﺎ ﻛَﺬَﻟِﻚَ ﻳُﺒَﻴِّﻦُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺁﻳَﺎﺗِﻪِ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﻳَﺘَّﻘُﻮﻥَ { [ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : 187 ] অর্থ : আর যতক্ষন তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াতসমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে। সূরা বাকারা-১৮৭। ❁ প্রমাণ্যতা : উক্ত তিনটি আয়াতের মাঝে মহান আল্লাহ কোন এতেকাফের কথা নির্ধারণ করেন বলেন নি, তাইতো মুজতাহেদ ও মুহাদ্দেসগণ বলেন মানত ও মাহে রমজান ব্যতীত অন্য সময় এতেকাফ করা মুস্তাহাব বা নফল। যা মুসল্লি ও তাবলীগের সাথীগণের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আর হযরত মারয়াম (আ.) এর আয়তটিও উল্লেখ রয়েছে যে, তিনি মসজিদের মেহরাবের মাঝে এতেকাফ ছিলেন যা প্রসিদ্ধ বিষয়। ✏ হাদীস এর মাঝে রাসূল (সা.) বলেন- ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ ﻭﺯﻳﺎﺩﺗﻪ ( ﺹ : 12230 ) 12230 - ﻣَﻦِ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﺇِﻳﻤَﺎﻧﺎً ﻭَﺍﺣْﺘِﺴﺎﺑﺎً ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗﻘﺪﻡ ﻣﻦ ﺫﻧﺒﻪ ( ﻓﺮ ) ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ . অথ : যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত সাওয়াবের আশায় এতেকাফ করে আল্লাহ তার পূববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন। আল জামেউস সগীর-১২২৩০। প্রমাণ্যতা : এধরনের আরো অসংখ্য হাদীস রয়েছে যেখানে মাহে রমজান বা মান্নত এর এতেকাফের কথা উল্লেখ নেই তাহলে নিশ্চয় বুঝা গেলো এটি ত্বিতীয় প্রকারের এতেকাফ তথা নফলসহ সব প্রকারের সাওয়াবের প্রতি অর্পন করা হবে। ✏ আহলে হাদীসদের মহাগুরু শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানী বলেন- ﺇﺭﻭﺍﺀ ﺍﻟﻐﻠﻴﻞ ﻓﻲ ﺗﺨﺮﻳﺞ ﺃﺣﺎﺩﻳﺚ ﻣﻨﺎﺭ ﺍﻟﺴﺒﻴﻞ (/4 139 ) ﻭﺯﺍﺩ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻰ : " ........... , ﻭﻻ ﺍﻋﺘﻜﺎﻑ ﺇﻻ ﻓﻰ ﻣﺴﺠﺪ ﺟﻤﺎﻋﺔ , ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ ﻓﻴﻤﻦ ﺍﻋﺘﻜﻒ ﺃﻥ ﻳﺼﻮﻡ ." ﻗﻠﺖ : ﻭﺇﺳﻨﺎﺩﻩ ﺻﺤﻴﺢ . ❑ ইমাম বায়হাকী বর্ণনা করেন যে, এতেকাফ অবশ্যই এমন মসজিদে হতে হবে। যাতে জামাত অনুষ্ঠিত হয়, আর এতেকাফ অবস্থায় রোজা রাখা সুন্নাত। লিখক (শায়খ আলবানী বলেন) হাদীসটি সহীহ। ❖ প্রমাণ্যতা : দেখুন আহলে হাদীস ভাইগণ বলেন, মাহে রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করা ব্যতীত অন্য কোন প্রকারের এতেকাফ করার প্রমাণ নেই। এখন আমার কথা হলো আলবানী সাহেব উক্ত আলোচনায় বলেছেন ‘‘এতেকাফ অবস্থায় রোজা রাখা সুন্নাত’’ তাহলে কি তাদের নিকেটে মাহে রমজানের রোজা রাখা সুন্নাত? না কি ফরজ? যদি বলেন সুন্নাত তাহলে আপনি কোরআন বিরোধী। কেননা আল্লাহ কোরআনে বলেন-{ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢُ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ { [ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ : 183 ] তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে বলতে হবে ফরজ। এখন আসুন তাহলে উক্ত হাদীসে ‘‘এতেকাফ অবশ্যই এমন মসজিদে হতে হবে যাতে জামাত অনুষ্ঠিত হয়, আর এতেকাফ অবস্থায় রোজা রাখা সুন্নাত।’’ দ্বারা বুঝা গেলো এতেকাফ যে কোন সময় হতে পারে চাই তা একদিনের জন্য হোক অথবা তার চেয়ে কম সময়ের জন্য। উক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেলো শায়খ আলবানী নিজেই এতেকাফ তিন প্রকারের প্রবক্তা ছিলেন। তাহলে এখন থেকে যেন আহলে হাদীস ভাইগণ নিজ মন্তব্য ও মতামত পরিবর্তন করে সঠিক আকিদা গ্রহণ করে। ইরওয়াউল গালীল লিল আলবানী-৪/১৩৯। ❑ উল্লেখ্য যে মুজতাদের, ফুকাহা ও মুহাদ্দীসগণ, সহীহ বুখারীর প্রথম হাদীস ‘‘ সব আমলই নিয়তের উপর নির্ভরশীল’’ এর অনুসারে বলেন এতেকাফের মাঝে নিয়ত আবশ্যক। ░▒▓█► উক্ত মতবাদের ভাইদের প্রতি প্রশ্ন : আপনারা বলেন, এতেকাফ মাত্র এক প্রকার তা হলো মাহে রমজানের শেষ দশ দিন । এখন আসুন আপনারা নিন্ম হাদীসে বর্ণিত এতেকাফ কে কি নামে নাম করণ করবেন? ﺻﺤﻴﺢ ﺍﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ - ﻣﺤﻘﻘﺎ (/8 423 ) 3664 - ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺍﻟﺴَّﺎﻣِﻲُّ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺣْﻤَﺪُ ﺑْﻦُ ﺣَﻨْﺒَﻞٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺃَﺑِﻲ ﻋَﺪِﻱٍّ، ﻋَﻦْ ﺣُﻤَﻴْﺪٍ ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﻘِﻴﻤًﺎ ﻳَﻌْﺘَﻜِﻒُ ﺍﻟْﻌَﺸْﺮَ ﺍﻟْﺄَﻭَﺍﺧِﺮَ ﻣِﻦْ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﺎﻓَﺮَ ﺍﻋْﺘَﻜَﻒَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌَﺎﻡِ ﺍﻟْﻤُﻘْﺒِﻞِ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ (1 ) . __________ ( 1 ) ﺇﺳﻨﺎﺩﻩ ﺻﺤﻴﺢ অর্থ : হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূল (সা.) মুকিম অবস্থায় মাহে রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন, আর যদি মুসাফির অবস্থায় থাকেন তাহলে পরবর্তী রমজানে বিশ দিন এতেকাফ করতেন। ইবনে হিব্বান-৮/৪২৩, হাদীস-৩৬৬৪। শায়খ নাসির উদ্দীন আলবানী উক্ত হাদীসকে সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। সিলসিলাতুস সহীহা-৩/৩৯৯, হাদীস-১৪১০। আল্লামা সাফরীনী আল হাম্বলী বলেন হাদীসটি হাসান। শারহু সোলাসিয়াতুল মুসনাদ-১/৬৩২। সব অবস্থায় হাদীসটি প্রমাণযোগ্য। ✏ এখন সালাফী ভাইদের প্রতি প্রশ্ন হলো ‘‘পরবর্তী রমজানে বিশ দিন এতেকাফ করতেন।’’ এটি কোন তরীকার এতেকাফ? জানিয়ে বাধিত করবেন। কেয়ামত পর্যন্ত সময় দেয়া হলো। চলবেই ইনশাআল্লাহ ✍ ইতি মুফতী মো. ছানা উল্লাহ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন