বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০১৫
সত্যকথা সত্যপথের দিশারি। ★★★★★★★★★★★ এম সাইফুল ইসলাম খাঁন। ডাঃ জকির নায়েক বলেছেন। Our prophet was a muslim। আমাদের নবীএকজন মুসলিম ছিলেন। আমাদের প্রিয় নবী কী ছিলেন? তিনি কি হানাফী? শাফেয়ী? মালেকী? হাম্বলী ছিলেন? না। তিনি মুসলিম ছিলেন। যেমন পূর্ববর্তী নবীগণ মুসলিম ছিলেন। বিজ্ঞ পাঠক! একটু লক্ষ করুণ! ডাঃজাকির নায়েক প্রশ্ন করেছেন। আমাদের নবী কী ছিলেন? তিনি কী হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী , হাম্বলী ছিলেন? তিনি ছিলেন, মুসলমান। আমাদের প্রথম প্রশ্ন হল, নবীজী মুসলমান ছিলেন। তবে কী হানাফী, শাফেয়ী এরা কী মুসলমান নয়? হানাফী , শাফেয়ী... ইত্যাদি এবং মুসলমান হওয়ার মাঝে কোন Contradictionআছে কী? আমরা যদি ডাঃ জাকির নায়েককে জিজ্ঞেস করি, আপনার পিতা কে? তখন কী বলবেন?? তাঁর পিতার নাম বলবেন। সহজ ব্যাপার। এখন নিচের আয়াতটি লক্ষ করুণ! আল্লাহ পাক বলেছেন, ﻣِﻠَّﺔ ﺃﺑﻴﻜﻢ ﺇﺑﺮﺍﻫﻴﻢ তোমাদের পিতা ইবরাহিমের ধর্ম। কুরআনে বলছে, ডাঃ জাকির নায়েকের পিতা ইবরাহিম। রাসূল (সঃ) বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে বলেছেন, ﻳﺎ ﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ ! ﺇﻥ ﺭﺑﻜﻢ ﻭ ﺍﺣﺪ ﻭ ﺃﻥ ﺃﺑﺎﻛﻢ ﻭﺍﺣﺪ، ﻛﻠﻢ ﻵﺩﻡ ﻭ ﺁﺩﻡ ﻣﻦ ﺗﺮﺍﺏ “হে মানব সকল! তোমাদের প্রভূ এক, তোমাদের পিতা এক। তোমরা সকলেই আদমের সন্তান।” এ হাদীস থেকে বোঝা গেল, সকলের পিতা একজন। তিনি হলেন হযরত আদম (আঃ) এখন কেউ যদি ডক্টর জাকির নায়েককে প্রশ্ন করে, তোমার পিতা কয়জন? তুমি করিমের ছেলে, তুমি ইবরাহিমের ছেলে, তুমি আদমের ছেলে, তোমার পিতা কয়জন? এ প্রশ্ন করে কেউ যদি উপসংহারে পৌঁছে, তবে? যার অনেক বাপ থাকে, সেই উপসংহার যদি টানে? মাযহাবের বিষয়ে ডাক্তার জাকির নায়েক যেভাবে খুব সহজে উপসংহারে পৌঁছে গেলেন, “আমাদের নবীজী মুসলমান ছিলেন, হানাফী, শাফেয়ী ছিলেন না” তবে কি হানাফী, শাফেয়ী সবাই কি অমুসলিম? নাউযুবিল্লাহ। একজন নিরেট মূর্খ লোকের কাছ থেকে যদি এ প্রশ্নটি হত, তবে আমাদের কোন আপত্তি ছিল না। কিন্তু ডাঃ জাকির নায়েকের মত জ্ঞানী লোক যদি এধরণের কথা বলেন, তবে অবশ্যই সেটা আপত্তিকর। এখন কোন শ্রোতা যদি তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনার বাপ কয়জন, আদমের ছেলে, ইবরাহিমের ছেলে আবার আব্দুর রহিমের ছেলে? তিনি কী উত্তর দিবেন? তিনি হয়ত, বলবেন, দেখুন! তিনজনই আমার পিতা। এদের মধ্যে কোন বিস্তর. তফাৎ নেই। হযরত আদম (আঃ) হলেন, আমাদের আদি পিতা। হযরত ইবরাহিম (আঃ) আমাদের ধর্মীয় পিতা। আমার জন্মসূত্রে পিতা হলেন, আব্দুর রহিম। এদের মধ্যে কোন বৈপরিত্ত নেই। তবে এক্ষেত্রে তিনি কেন হানাফী, শাফেয়ী এগুলোর মাঝে এবং মুসলমান হওয়ার মাঝে কিসের এতো বিস্তর তফাৎ খুঁজে পেলেন ??? তবে তার মতে, শাফেয়ী, হানাফী, মালেকী, আহলে হাদীস, সালাফী, তাবলীগী, জামাতী এরা মুসলমান নয় (নাউযুবিল্লাহ) ২. আমরা পূর্বে বনী কুরায়যার ঘটনা উল্লেখ করেছি। একদল সাহাবীকে রাসূল (সঃ) বলেছেন, তোমরা বনী কুরায়য়াতে না পৌঁছে নামায পড়বে না। পথিমধ্যে আসরের ওয়াক্ত হওয়ায় একদল সাহাবী পথেই নামায পড়ে নিলেন। আরেকদল সাহাবী বললেন, আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে বনী কুরায়যাতে না পৌঁছে নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। সুতরাং তারা সন্ধার পরে বনী কুরায়যাতে পৌঁছে আসরের নামায পড়ে। এখন রাসূল (সঃ) নিকট এ ঘটনা বর্ণনা করা হলে, তিনি কাউকেই কিছু বললেন না। এখন আমাদের প্রশ্ন হল, রাসূল কোন পক্ষে ছিলেন? যারা পথে নামায পড়েছেন, তাদের পক্ষে? না কি যারা বনী কুরায়যাতে পৌঁছে নামায পড়েছে। রাসূল কোন দলে ছিলেন? রাসূল “মুসলমান” হয়ে কোন দলে ছিলেন? ৩. রাসূলের ইন্তেকালের পর বিভিন্ন ধরণের মাসআলা মাসাইলের ক্ষেত্রে যেমন, হযরত আবু বকর ও হযরত উমর কিংবা হযরত আলী কিংবা উমরের মাঝে মতপার্থক্য হয়েছে। এখন কেউ যদি প্রশ্ন করে, রাসূল কোন দলে ছিলেন, উমরের না আবু বকরের? আলীর পক্ষে না উমরের পক্ষে? এধরণের অযৌক্তিক প্রশ্ন করে, মাযহাবের বিরুদ্ধে মানুষের মনে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে ইসলাম ও মুসলমানদের লাভ কী??? … … আবার ধরুণ! ডাঃ জাকির নায়েকের একজন শ্রোতা তকে প্রশ্নোত্তর পর্বে কোন মাসআলার সমাধান চাইল। জাকির নায়েক তাকে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মাসআলার সমাধান দিল। সাধারণতঃ তিনি বিভিন্ন ধরণের এধরণের সমাধান দিয়ে থাকেন (?) প্রশ্নকারী লোকটি জাকির নায়েকের দেয়া মাসআলার উপর আমল করা শুরু করল। এখন তৃতীয় কেউ যদি তাকে এসে বলে, তুমি জাকির নায়েকী, নাকি মুসলমান? তুমি মুসলমান না কি জাকির নায়েকের পক্ষে? এখানে জাকির নায়েক যদি কুরআন ও সুন্নাহ সমাধান দিয়ে থাকেন, তবে এখানে কেউ কি বলবে, তুমি ইসলাম ছেড়ে জাকির নায়েকে ধর্মে চলে গেছো?? তুমি মুসলমান না কি জাকির নায়েকী?? ডাঃ জাকির নায়েক বলেছেন, আমাদের নবী মুসলমান ছিলেন। আমরা বলব, তিনি শুধুই মুসলমানই ছিলেন না, সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলমান ছিলেন। আমরা তাঁর অনুসারী হয়ে, তাঁর উম্মত হয়ে আল- হামদুলিল্লাহ, সুম্মা আল-হামদুলিল্লাহ আমরা মুসলমান। কিন্তু রাসূল কি শুধুই মুসলমান ছিলেন নাকি তাঁর আরও লেবেল ছিল? ১/রাসূল মু’মিন ছিলেন ২/রাসূল (সঃ)এর বড় লেবেল ছিল, তিনি রাসূলুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল ছিলেন। ৩/মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর নবী ছিলেন। ৪. মুহাম্মদ (সঃ) “রাহমাতুল্লিল আলামিন” উভয় জাহানের জন্য রহমত ছিলেন। ৫. মুহাম্মদ (সঃ) কুরায়শী ছিলেন। ৬. মুহাম্মাদ (সঃ) মুহাজির (আল্লাহর পথে হিজরতকারী ) ছিলেন। ৭. মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর পথের মুজাহিদ ছিলেন। ৮. মুহাম্মাদ (সঃ) বাশির (সুসংবাদ দাতা) নাযীর (ভীতি প্রদর্শনকারী), সিরাজাম মুনীরা (উজ্জ্বল আলোক বর্তিকা) ছিলেন। সংক্ষেপে এগুলো আমরা উল্লেখ করলাম। এখন প্রশ্ন হল, রাসূলের লেবেল মুসলমান ছিল একথা সত্য, কিন্তু তার অর্থ কী এই যে, তার লেবেল রাসূল ছিল না (নাউযুবিল্লাহ) রাসূল (সঃ) মুহাজির ছিলেন, তাঁর অর্থ কি এই যে, তিনি মুসলমান ছিলেন না? (নাউযুবিল্লাহ) হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর লেবেল কতগুলো ছিল? তিনি- ১. মুসলমান ছিলেন। ২. কুরায়শী ছিলেন। ৩. খলিফাতুল মুসলিমীন ছিলেন। ৪. তিনি মুহাজির ছিলেন। কোথাও তো কেউ এ প্রশ্ন উত্থাপন করে নি যে, তিনি মুসলমান ছিলেন না কি খলিফাতুল মুসলিমীন ছিলেন। হযরত উমর (রাঃ) মুসলমান ছিলেন, না কি আমীরুল মু’মিনীন ছিলেন? ডাঃ জাকির নায়েক কি এক্ষেত্রেও প্রশ্ন উত্থাপন করবেন যে, তিনি মুসলমান না কি আমিরুল মু’মিনীন? এক্ষেত্রে যদি প্রশ্ন না আসে তবে, মাযহাবের ক্ষেত্রে কেন এ প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে, তুমি হানাফী না কি মুসলমান???
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন